ঈদকে সামনে রেখে বাহারি পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। অভিজাত বিপণি বিতান থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার ছোট বড় মার্কেটের দোকানগুলো এখন বাহারি পোশাকে ঠাসা। এবার রাজধানীর শপিং মলগুলো সেজেছে নতুন সাজে। দোকানিরা বলছেন, ঈদ কেনাকাটা মূলত শুরু হবে ১০-১৫ রোজার পর থেকে। এ সময় চাকরিজীবীরা বেতন-বোনাস পাবেন। অন্যদিকে তরুণ-তরুণীরা থাকেন ঈদের সর্বশেষ কালেকশনের অপেক্ষায়।
ঈদে লোকে একসঙ্গে অনেক রকম কেনাকাটা করেন। বেনারসিপল্লিতে কেবল এক রকম পণ্যের দোকান। তার ওপর ঈদে সবাই কাতান-বেনারসি কিনতে আগ্রহ দেখান না। সে কারণে অনেকেই এখন থ্রি–পিস, মিরপুরের বাইরের দেশের বিভিন্ন এলাকা যেমন পাবনা, টাঙ্গাইল, রূপগঞ্জের সুতি, সিল্ক, জামদানি শাড়ি লুঙ্গি এসবও এখন দোকানে তুলছেন।
‘শাড়ি’ শব্দটি উচ্চারণ মাত্রই বাঙালি রমণীর মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। শাড়ির প্রতি অনুরাগ নেই, এমন বাঙালি নারী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। যে কোনো উত্সবে শাড়ি ছাড়া নারীর সাজগোজ যেন অপূর্ণই থেকে যায়। বাঙালি নারীর জীবনে শাড়ি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। শাড়ির দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালে। স্বল্প আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের সামর্থ্যের শাড়ি। ৫শ’ থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকার বেশি দামের শাড়িও সোভা পাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দাম ঢাকাই জামদানি শাড়ির। এছাড়া তাঁত শাড়ি ৫শ’ ৫০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা, টাঙ্গাইল সিল্ক প্রিন্ট ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, কারচুপি ৯শ’ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা, বুটিক ৮শ’ থেকে ৬ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টাঙ্গাইল সুতি জামদানি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০, টাঙ্গাইল কাতান ২ হাজার ৮০০ থেকে ৫ হাজার টাকা। মসলিন জামদানি ২ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা, রাজশাহী সিল্ক ১ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার, হাফ সিল্ক ৬শ’ থেকে ৫ হাজার, মিরপুরের কাতান ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩০ হাজার, ঢাকাই জামদানি ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
এবার ঈদের জনপ্রিয় গজ কাপড়ের মধ্যে রয়েছে জর্জেট, লিনেন, কাতান, সিল্ক, নেট, খাদি, সামু সিল্ক আর সুতি প্রিন্ট, নেট কাপড়ের ওপর এমব্রয়ডারির কাজ, পুঁতি বসানো, বড় জরির ফুল, জরির সুতার কাজ অথবা ভারী কারচুপি কাজ—এমন কাপড়ের চল বেশি দেখা যাচ্ছে।
নেট জর্জেটের দাম পড়বে ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকা, যার মধ্যে রয়েছে পাথর ও এমব্রয়ডারির কাজ। সঙ্গে জর্জেট, প্রিন্টের সুতি ও লিনেনেরও চাহিদা রয়েছে। সামু সিল্কে পাবেন ফুল-পাতা,পোলকা ডট, ত্রিভুজের মোটিফ ও অক্ষরের ছাপ। গুজরাটি গজ কাপড়ও খুব চলছে। এক রঙের জর্জেট ২০০ টাকা প্রতি গজ, আবার অন্যদিকে সিনথেটিক কাতান ৩৫০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। জর্জেট এবং সিল্ক কাপড়ের প্রতি গজ ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে পাবেন।
গরমে আরামদায়ক কাপড় চাই? তাহলে সুতি বা লিনেনের মধ্যে আছে নানান অপশন। প্রিন্টের সুতি গজ কাপড়ের দাম পড়বে প্রতি গজ ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা, সুতি কাতান প্রতি গজ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। লিনেন কাপড়ের দাম ১৮০ থেকে ৩৫০ টাকা। আর সুতি ও লিনেনের দাম পড়বে গজ প্রতি ৬০ টাকা। জামার জন্য ক্রুশকাঁটা বা পুঁতি, ইয়োক পাবেন ১৫ টাকা থেকে হাজার টাকা দামের। পমপম এবং টারসেলের দাম পড়বে প্রতি পিস ১০ টাকা থেকে।
দর্জি দিয়ে কাপড় বানালে ফিটিং ভাল হয়, নিজের পছন্দমতো কাপড় দিয়ে বানানো যায়। তাই দর্জিবাড়িই বেশিরভাগ মেয়েদের পছন্দ। লং গাউন, কামিজ, লং কাটের ফ্রক—এগুলো সেলাই করতে খরচ পড়বে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা। তবে সালোয়ার-কামিজ ও আন্যান্য পোশাক এর সেলাইয়ের খরচ নির্ভর করে পোশাকের বিভিন্ন কাটিং এবং ডিজাইনের ওপর।
EmoticonEmoticon