নাসার সেরা উদ্ভাবক বাংলাদেশের মাহমুদা। নাসা গোডার্ডের দেওয়া আইআরএডি ইনোভেটর অফ দ্যা ইয়ার অ্যাওয়ার্ডটি জিতেছেন নাসায় কর্মরত বাংলাদেশি নারী গবেষক মাহমুদা সুলতানা।
কোয়ান্টাম ডট সেন্সর থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে তৈরির উপায় আবিষ্কার করায় তিনি এই পুরস্কার লাভ করেন। আইআরএডির দেওয়া আরও ১০টি পুরস্কারের জন্যেও তার নাম উঠে এসেছিল। নাসার সাময়িকী কাটিং এজের প্রচ্ছদেও উঠে এসেছেন মাহমুদা।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই মাহমুদা কাজ করছেন গ্রাফিন নিয়ে। কার্বনের এই বিশেষ রূপ কোয়ান্টাম ডট আকারে ব্যবহার করে আলোর কিছু বিশেষ তরঙ্গ ধারণ করা যায়। যা সূর্যের করোনার ছবি তোলার জন্য কাজে আসবে।
তবে কোয়ান্টাম ডট তৈরি করে তা দিয়ে একটি পুরো সেন্সর তৈরির কাজটি মোটেও সহজ ছিলো না। থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে ২০ বাই ২০ কোয়ান্টাম ডটের ছক সমৃদ্ধ সেন্সর তৈরি করে তার মাধ্যমে করোনার ছবি তোলার জন্য প্রয়োজনীয় তরঙ্গ ধারণ করা যায়। এটি প্রমাণ করার জন্যই মাহমুদা সুলতানাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
গবেষণার পাশাপাশি মাহমুদা ন্যানোটেক সম্মেলনে নাসার প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি গোডার্ডের ইন্সট্রুমেন্ট ও পেলোড সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রাঞ্চের অ্যাসোসিয়েট ব্রাঞ্চ হেডের দায়িত্বও মাহমুদাকে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি তার আবিষ্কার পরবর্তী প্রজন্মের কিউবস্যাট ও অন্যান্য মিশনের যন্ত্রপাতিতে ব্যবহার করতে পারবেন।
মাহমুদাকে নিয়ে তার সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রশংসা করতে কার্পণ্য করেননি। নাসা গোডার্ডের চিফ টেকনোলজিস্ট পিটার হিউস বলেন, ‘মাহমুদা নাসায় যোগদান করায় আমরা নিজেদেরকে ভাগ্যবান মনে করছি। কাজের শুরু থেকেই মাহমুদা বহুবার নিজেকে বুদ্ধিমতী ও কর্মঠ গবেষক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
নাসার সাময়িকী কাটিং এজের প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে মাহমুদা সুলতানা সিনিয়র টেকনোলজিস্ট ফর স্ট্র্যাটেজিক ইন্টেগ্রেশন টেড সোয়ানসন বলেন, মাহমুদা সবসময়ই সর্বশেষ প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং তার সহকর্মীদের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে আমাদের প্রযুক্তি আরও কতদূর এগিয়ে নেওয়া যায় তা নিয়ে সচেষ্ট ছিলেন। এছাড়াও কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ যোগার করতেও সে পিছপা হয়নি। সব মিলিয়ে তার মাঝে একজন সেরা গবেষকের সব গুণই রয়েছে। মাহমুদা সুলতানা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করলেও কৈশোরেই তিনি পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যান। পরবর্তীতে ২০১০ সালে এমআইটি থেকে তিনি কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি করেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সরাসরি এমআইটি থেকেই নাসায় তিনি গবেষক হিসেবে যোগদান করেন।
EmoticonEmoticon